ঢাকা, রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

‌‌আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে নিয়ে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত : সেতুমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:০৮, ২৫ জুলাই ২০২৪  

‌‌আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে নিয়ে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত : সেতুমন্ত্রী

‌‌আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে নিয়ে নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত : সেতুমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল ও শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা।’বুধবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত জাতীয় সংসদ আসন ঢাকা-৪ ও ঢাকা-৫ এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের অন্তর্গত জাতীয় সংসদ আসন ঢাকা-১৮-এর সংসদ সদস্যরা ও সংশ্লিষ্ট এলাকার অধীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ নিখাদ ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে, সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিস্তার ঘটানো হয়েছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমন্বয়করা প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে এ ধরনের ন্যক্কারজনক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই এবং তারা এর দায়ভার নেয়নি। প্রধানমন্ত্রী শুধু নন, সমগ্র দেশবাসীর কাছে এটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসন্ত্রাসের পেছনে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী ক্যাডারবাহিনী জড়িত।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সন্ত্রাসী বাহিনী রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের দলীয় স্থাপনায় এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ অনেক নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।’

পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা করে অনেককে হত্যা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নজিরবিহীনভাবে সাংবাদিকদের ওপর বর্বরোচিত হামলা করেছে। এমনকি এরা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিভিন্ন স্মারক যেমন মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজাসহ বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, সেতু ভবন, স্বাস্থ্য অধিদফতর ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর ভবন, বিআরটিএ, ডাটা সেন্টার, বিভিন্ন থানা ও পুলিশ বক্স, নরসিংদী কারাগার এবং বিভিন্ন স্থাপনা ও হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ও অগ্নিসংযোগ করেছে। জনগণের জীবনযাত্রায় স্বস্তি প্রদানকারী মেগা প্রকল্পগুলোকে লক্ষ্য করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির মূল উদ্দেশ্যই হলো বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়া। শেখ হাসিনার অদম্য স্পৃহা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে এক মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উন্নয়ন-অগ্রগতির চলমান চাকাকে থামিয়ে দিতে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা সুপরিকল্পিতভাবে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। যে উন্নয়ন-অগ্রগতির মাধ্যমে জনগণের কল্যাণ হয়েছে, জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে, তার ওপরে ন্যক্কারজনক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো একটি গণবিরোধী রাজনৈতিক অপশক্তির পক্ষেই সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘এই অপশক্তি মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার মূল চেতনার বিপরীতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। যা আমরা কোনোভাবেই হতে দিতে পারি না। যারা এই ধরনের ঘৃণিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই দায়বদ্ধতা পূরণে কোনও অপশক্তিকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। দেশবিরোধী এই অপশক্তি বিভিন্ন ধরনের গুজব সৃষ্টি করছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার ফলে দেশের সাধারণ মানুষের জীবিকা নির্বাহের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় নিম্নবিত্ত, গরিব ও খেটে খাওয়া মানুষের প্রতি হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে অসহায়, গরিব, দুস্থ মানুষের পাশে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সব স্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়