ঢাকা, রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

সীমালঙ্ঘনের কারণে বনী ইসরাঈলের যে পরিণতি হয়েছিল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ১৬ জুলাই ২০২৪  

সীমালঙ্ঘনের কারণে বনী ইসরাঈলের যে পরিণতি হয়েছিল

সীমালঙ্ঘনের কারণে বনী ইসরাঈলের যে পরিণতি হয়েছিল

হজরত দাউদ আ. ছিলেন বনী ইসরাঈলের নবী। তাঁকে আল্লাহ তায়ালা আসমানী কিতাব যাবুর দিয়েছিলেন। তিনি বনী ইসরাঈলের যেই সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরিত হয়েছিলেন তারা সমুদ্রোপকূলের অধিবাসী ছিল। তাদের জীবিকা নির্বাহের মূল উৎস ছিল মাছ শিকার। তবে তাদের জন্য শনিবারে মাছ শিকার নিষিদ্ধ ছিল। কারণ, দাউদ আ.-এর কণ্ঠ সবাইকে মোহিত করতো। শনিবারে তাদের জন্য ধর্মীয় বিধান পালন ও ইবাদতের দিন ছিল। দাউদ আ. এ দিনেই যাবুর কিতাব পাঠ করতেন। 

তার সুরেলা কণ্ঠে মোহিত হয়ে মানুষের পাশাপাশি অন্যান্য জীবজন্তুও যাবুর কিতাব শুনতে ভিড় জমাতো। নদী-পুকুরের মাছও তীরে ভিড়ে যাবুর পাঠ শ্রবণ করত। এজন্য শনিবারে মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

শনিবারে মাছ শিকার নিষিদ্ধের নির্দেশের পর দাউদ আ.-এর সম্প্রদায়ের লোকেরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেল। একদলে ছিল সৎ ও বিজ্ঞজনেরা। তারা নবীর আদেশ পালন করতো এবং শনিবারে মাছ শিকার থেকে বিরত থাকতো। অপর দলে ছিল অবাধ্যরা। তারা নবীর সেই আদেশ অমান্য করলো।

শনিবারে সরাসরি মাছ শিকার না করলেও জাল দিয়ে আটকে ফেলত ও রোববারে সেসব মাছ ধরত। 

সৎলোকেরা তাদের এই অপকর্মে বাধা দিলেন। কিন্তু তারা বিরত হলো না। অবশেষে সৎ লোকেরা অবাধ্যদের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করে পৃথক হয়ে গেলেন। এমনকি বাসস্থানও দুই ভাগে ভাগ করে নিলেন। একভাগে অবাধ্যরা বসবাস করতো আর অপর ভাগে সৎ ও বিজ্ঞজনেরা বাস করতেন। 

আল্লাহ তায়ালা অবাধ্যদের এ সীমা লঙ্ঘনে ক্রোধান্বিত হলেন। তাদের ওপর অভিশাপ বর্ষণ করলেন। তারা আল্লাহর ক্রোধে বানরে রূপান্তরিত হয়ে গেলো।

কাতাদাহ বলেন, তাদের যুবকরা বানরে এবং বৃদ্ধরা শুকরে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। রূপান্তরিত বানররা নিজ নিজ আত্মীয় স্বজনকে চিনতো এবং তাদের কাছে এসে অঝোরে অশ্রু বিসর্জন করতো। 

একদিন সৎ লোকেরা অবাধ্যদের বস্তিতে অস্বাভাবিক নীরবতা লক্ষ্য করলেন। এরপর সেখানে পৌঁছে দেখলেন যে, সবাই বিকৃত হয়ে বানরে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। 

হাদিসে এসেছে, এক সাহাবি একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের যুগের বানর ও শুকরগুলো কি সেই রূপান্তরিত ইহুদি সম্প্রদায়? তিনি বললেন, আল্লাহ্ তায়ালা যখন কোন সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকেন তখন তিনি তাদের অবশিষ্ট বংশধর রাখেন না। মূলত বানর ও শূকর পৃথিবীতে তাদের পূর্বেও ছিল। (মুসলিম, হাদিস : ২৬৬৩)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এ বিষয়ে বলেছেন—

وَ لَقَدۡ عَلِمۡتُمُ الَّذِیۡنَ اعۡتَدَوۡا مِنۡكُمۡ فِی السَّبۡتِ فَقُلۡنَا لَهُمۡ كُوۡنُوۡا قِرَدَۃً خٰسِئِیۡنَ

আর তোমাদের মধ্যে যারা শনিবার সীমালঙ্ঘন করেছিল তাদেরকে তোমরা নিশ্চিতভাবে জেনেছিলে। ফলে আমি তাদেরকে বলেছিলাম, তোমরা ঘৃণিত বানরে পরিণত হও। (সূরা বাকারা, আয়াত : ৬৫)

সর্বশেষ
জনপ্রিয়