ঢাকা, রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

মির্জা ফখরুলকে নিয়ে রহস্যের ধুম্রজাল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ২৫ জুলাই ২০২৪  

মির্জা ফখরুলকে নিয়ে রহস্যের ধুম্রজাল

মির্জা ফখরুলকে নিয়ে রহস্যের ধুম্রজাল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে আবার রহস্যের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির মধ্যে তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। তার অনীহা অনাগ্রহের কারণে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিএনপির সম্পৃক্ততা বেগবান হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন সন্ত্রাসী আন্দোলনের রূপ নেয় তখন তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন, যথাযথ নির্দেশনা দেননি। এমনকি এই আন্দোলনকে সমর্থন করার উদ্যোগও গ্রহণ করেননি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে লন্ডন থেকে যে সমস্ত নির্দেশনাগুলো এসেছিল, সেই সমস্ত নির্দেশনাগুলো অনেক কিছুই তিনি বাস্তবায়ন করেনি। 

উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন নাশকতা এবং সহিংসতায় রূপ নেয়। এই আন্দোলনে বিএনপি এবং জামায়াত সন্ত্রাসী তৎপরতা চালায়। ভাড়াটে পেশাদার প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়, হাজার কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট করা হয়। 

কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন বেগবান হতে থাকে তখনই লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বার্তা পাঠান এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে। কিন্তু তখনই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি যুক্তি দেখান যে এটি কোটার আন্দোলন। এই আন্দোলনে যদি বিএনপি সম্পৃক্ত হয়, বিএনপি হবে ‘বি টিম’। তাছাড়া এই আন্দোলন করে শেষ পর্যন্ত সরকারকে হটানো যাবে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তবে শেষ পর্যন্ত লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার ধমক খেয়ে আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করে বিএনপি। যদিও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফাঁক রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, সমর্থন দেওয়া হবে, তবে আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি তারা যুক্ত হবে না। কিন্তু এই সময় তারেক জিয়া যা রসদপত্র আছে, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়ার সেই নির্দেশ প্রতিপালন করেননি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এমনকি ছাত্রদলের অনেক নেতা যখন নির্দেশনা চেয়ে ছিল সেই নির্দেশনায় তিনি নির্লিপ্ত ছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

অভিযোগ উঠেছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে যখন রাস্তায় নেমে যেতে বলা হয়েছিল, তিনি তখন রাজপথেও নামেননি। বিশেষ করে শনিবার যখন আন্দোলন তীব্র সহিংস পরিস্থিতির দিকে যায়, সেই সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে রাজপথে নামার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে রাজপথে যাওয়া সম্ভব নয়। আর এ কারণেই তারেক জিয়া বিকল্প হিসেবে রুহুল কবির রিজভী, আমির খসরু মাহমুদ, নজরুল ইসলাম খানকে দিয়ে আন্দোলন পরিচালনা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অবশ্য সরকার দ্রুত তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। ফলে এই আন্দোলনে বিএনপির কোনো নেতা আর সামনে আসতে পারেননি। আর এ কারণেই বিএনপির মধ্যে এখন তোলপাড় চলছে। 

বিএনপির অনেকেই মনে যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির নেতৃত্বে থাকতে চান না। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি মহাসচিবের পদ ছাড়ার জন্য দেন দরবার করছেন। এই কারণেই হয়তো তিনি আন্দোলন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শারীরিক ভাবে অসুস্থ। রাজপথে গিয়ে পিটুনি খাওয়ার মতো সক্ষমতা তার নেই। তবে কারও কারও মতে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে সরকারের একটি গোপন সমঝোতা হয়েছিল। সে কারণেই হয়তো তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন। 

তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এই আন্দোলনের পরিণতি যে খারাপ হবে এবং শেষ পর্যন্ত বিএনপি এই আন্দোলন দ্বারা আরেকবার আক্রান্ত হবে এটি তিনি আগে থেকেই অনুভব করেছিলেন এবং সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। আর এ কারণেই তিনি এই আন্দোলনের সঙ্গে সবকিছু উজাড় করে দিয়ে যুক্ত হননি। তবে এর কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বড় ধরনের মাসুল দিতে হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। হয়তো সামনের দিনগুলোতে মহাসচিব পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ফখরুল হয়তো এটিই চেয়েছেন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়