ঢাকা, রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

বেনাপোল-মোংলায় বাণিজ্যিক রেল চলাচল শুরু

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৪৯, ২ জুন ২০২৪  

বেনাপোল-মোংলায় বাণিজ্যিক রেল চলাচল শুরু

বেনাপোল-মোংলায় বাণিজ্যিক রেল চলাচল শুরু

যশোরের বেনাপোল থেকে বাগেরহাটের মোংলা বন্দর পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে রেল চলাচল শুরু হয়েছে। উদ্বোধনের সাত মাস পর গতকাল সকাল দশটায় বেনাপোল থেকে ৫৪৯ যাত্রী নিয়ে রওনা দিয়ে দুপুর দুইটায় ট্রেনটি মোংলা বন্দরে পৌঁছায়। বন্দরটি প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পর প্রথমবারের মতো যাত্রীবাহী রেল চলাচল শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তারা আশা করছেন এই রেলপথ দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করবে।

বেনাপোল-মোংলা রেলপথের দূরত্ব ১৩৮ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার। বেনাপোল থেকে প্রতিদিন সকাল সোয়া ৯টায় ট্রেনটি মোংলার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এরপর মোংলা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে দুপুর ১টায়; যেটি বেনাপোলে পৌঁছাবে বিকাল সাড়ে ৪টায়। মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন এ পথে একই সময়ে ট্রেনটি চলাচল করবে।

বেনাপোল থেকে ট্রেন ছাড়ার পর নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালি, চুলকাটি বাজার, ভাগা ও দিগরাজ স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে ট্রেনটি। মোট আসন সংখ্যা ৭১৬টি।

বাণিজ্যিক রেল চলাচল শুরু হওয়ার দিনে প্রতিটি স্টেশনে ছিল যাত্রীদের ভিড়। খুলনার মোহাম্মদনগর স্টেশনের টিকিট বুকিংয়ের দায়িত্বে থাকা মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত। স্টেশনে যাত্রীদের অনেক ভিড়। যাত্রীদের জন্য মোংলা থেকে বেনাপোল যাওয়ার ও বেনাপোল থেকে মোংলা গমনাগমনে সুবিধা হলো।

খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তারা বলছেন, কম খরচে সহজে যাতায়াত এবং আরামদায়ক ভ্রমণও করতে পারবেন। চিকিৎসাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজেও ভারতে যেতে এই রুট সহজ হবে তাদের। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও যাত্রীরা বলছেন, রেলপথ চালু হওয়ায় মোংলা বন্দরের সঙ্গে ভারত, ভুটান ও নেপালের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। তবে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের দাবি অফিস টাইম অনুযায়ী সকালে একটি ট্রেন চালুরও।

এ রুটে খুলনার ফুলতলা পর্যন্ত ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতি থাকবে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, এরপর ফুলতলা থেকে মোংলা নতুন রেলপথে এ ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি থাকবে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। মোংলা-বেনাপোল রুটে ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ টাকা এবং মোংলা-খুলনার ফুলতলা পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ টাকা। মোংলা রেলস্টেশন মাস্টার এস এম মনির আহম্মেদ বলেন, এই পথে মঙ্গলবার বন্ধ রেখে সপ্তাহে ৬ দিন চলবে মোংলা এক্সপ্রেস নামে একটি কমিউটার ট্রেন। এ লাইনে আপাতত নতুন ট্রেন চালুর পরিকল্পনা নেই।

উল্লেখ্য, মোংলা সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত মোংলা বন্দরের অবস্থান খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে পশুর নদী ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে। বন্দরের সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরের রেল সংযোগ স্থাপনের প্রকল্প একনেকের অনুমোদন পায় ২০১০ সালে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে কাজ শুরুর পর নানা জটিলতায় পাঁচ দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ শেষ হয়। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়