বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ পদক : সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের
নিউজ ডেস্ক
বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ পদক : সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের
আগামী ২৩ মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করবে সরকার। এ লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত।
১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর পদকপ্রাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে বিশ্বশান্তি পরিষদ। আর পরের বছর ২৩ মে এশীয় শান্তি সম্মেলনে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে সেই পদক বঙ্গবন্ধুকে পরিয়ে দেন পরিষদের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচন্দ্র।
সেই অনুষ্ঠানে রমেশচন্দ্র বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু।’
স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ। আগামী ২৩ মে বঙ্গবন্ধুর এই পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর। দিনটি উদযাপন করতে গত ৯ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মোট ১৯টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গত ১৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সকল সিনিয়র সচিব, সকল বিভাগীয় কমিশনার, সকল জেলা প্রশাসক এবং সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে :
৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী, ২৩ মে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা সভার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
এ আলোচনা সভা আয়োজনের লক্ষ্যে ‘আলোচনা সভা আয়োজন উপকমিটি’ গঠন করা হয়েছে। জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবকে এ উপকমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। উপকমিটিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব, বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে।
উপকমিটির কর্মপরিধিতে বলা হয়, কমিটি জাতীয়ভাবে আলোচনা সভা আয়োজনের যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে। কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
জাতীয়ভাবে আলোচনা সভার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন সংক্রান্ত উপকমিটিও গঠন করা হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে আহ্বায়ক এবং এ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে উপকমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। উপকমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন- মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব।
এ উপকমিটির কর্মপরিধিতে বলা হয়, কমিটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনে যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে এবং কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির অর্জন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশেকে অনন্য উচ্চতায় আসীন করার বিষয়টি ব্যাপক প্রচারের জন্য পুস্তিকা বা পকেট বই প্রকাশ করার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ‘পুস্তিকা/পকেট বই প্রস্তুত উপকমিটি’ গঠন করা হয়েছে। এ উপকমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক মুখ্যসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব।
এ উপকমিটিতে সদস্য হিসেবে যাদের যুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং কলাম লেখক ও গবেষক মোনায়েম সরকার।
অন্যদিকে, বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে এ তিনটি ছাড়াও আরও পাঁচটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।
সেগুলো হলো- ভেন্যু ব্যবস্থাপনা ও সাজ-সজ্জা উপকমিটি, অভ্যর্থনা ও আসন ব্যবস্থাপনা উপকমিটি, ভাষণ প্রস্তুত ও অনুষ্ঠান ধারাক্রম তৈরি উপকমিটি, আপ্যায়ন উপকমিটি, অতিথি তালিকা তৈরি, আমন্ত্রণপত্র প্রস্তুত, বিতরণ ও নিশ্চিতকরণ উপকমিটি।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের জন্য ৫ মিনিটের ১টি এবং ৩০ সেকেন্ডের ১টিসহ মোট ২টি ভিডিও ডকুমেন্টারি তৈরি করা হবে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ছবি সংবলিত স্মারক ডাক টিকেট প্রকাশ করবে ডাক ও টেলিযোগ বিভাগ। দেশব্যাপি আয়োজিত সকল অনুষ্ঠানের জন্য একই ডিজাইনের লোগো ও ব্যানার তৈরি করা হবে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।
আলোচনা সভা অনুষ্ঠানস্থল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সকল ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার, বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন, জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীতে ক্রোড়পত্র প্রকাশ, পোস্টার প্রকাশ এবং জাতীয়ভাবে নেওয়া কর্মসূচির ব্যাপক প্রচার করা হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন বা দূতাবাসগুলোতে আলোচনা সভা, ভিডিও ডকুমেন্টরি প্রদর্শন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দেশের সকল মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও উপাসনালয়ে সুবিধাজনক সময়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে। দেশব্যাপী স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে চিত্রাংকন ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন।
জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হবে।
এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর তাদের নিজস্ব বাজেট থেকে এই অনুষ্ঠানের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করবে। নিজস্ব বাজেটের বাইরে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হলে অর্থ বিভাগের সম্মতি নিয়ে প্রয়োজনীয় অর্থের সংকুলান করা যেতে পারে বলেও সভায় জানানো হয়।
সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবের আমেজে উদযাপনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নেওয়া করা হয়েছে। দিনটি মর্যাদার সাথে উদযাপনের লক্ষ্যে আন্তরিকতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানান।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো. সাজ্জাদুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ২৩ মে জাতীয়ভাবে প্রোগ্রাম করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই প্রোগ্রামটি কিভাবে করা যায় সেজন্য গত ৯ এপ্রিল একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, তবে মূল অনুষ্ঠান কোথায় হবে তা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। বিষয়টি উচ্চপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান মো. সাজ্জাদুল হাসান।
- PM opens Southeast Asia`s largest fertiliser factory in Narsingdi
- Tk 12,500 announced as minimum wage for RMG workers
- PM vows to make leprosy free Bangladesh by 2030
- Bangladesh joins `50-in-5` campaign as first-mover country to implement DPI
- রাজধানীতে আজ চালু হলো ১০টি ইউটার্ন
- আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাঃ রাষ্ট্র বনাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
- কৃষিপণ্য কেনাবেচার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ফুড ফর ন্যাশন’ উদ্বোধন করে
- বঙ্গবন্ধুর সাথে ছোট বেলার স্মরণীয় মধুর স্মৃতি
- ২৫তম পর্ব: কর্ডন প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই
- Metro-rail brings ease in capital`s nightmare transport system