নামাজরত অবস্থায় ওজু ভেঙে গেলে করণীয় কী?
নিউজ ডেস্ক
নামাজরত অবস্থায় ওজু ভেঙে গেলে করণীয় কী?
নামাজ পড়ার সময় ওজু ভেঙে যাওয়ার ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটে থাকে। এ অবস্থায় করণীয় কী?তিনি ইমাম হলে করণীয় কী, মুক্তাদি হলে করণীয় কী এবং মুসল্লি হলে করণীয় কী—তা ফিকহের কিতাবে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে অতিগুরুত্বপূর্ণ ৮টি মাসআলা তুলে ধরা হলো—
(এক) যদি নামাজ পড়ার সময় কারো ওজু ভেঙে যায় এবং তিনি ইমাম হন, তবে পেছনে দাঁড়ানো ইমামতির যোগ্য এবং মাসবুক (জামাতে নামাজের কোনো রাকাত ছুটে গেছে এমন) নন এমন কোনো ব্যক্তিকে তার স্থলাভিষিক্ত করবেন। ইমাম পেছনে ফিরে একজনকে ইশারা করে তার স্থলাভিষিক্ত করবেন। তিনি নামাজ চালিয়ে যাবেন। আর মুক্তাদি হলে বা একাকী নামাজ পড়লে কাউকে স্থলাভিষিক্ত করার দরকার নেই। এরপর কারো সঙ্গে কোনো কথা না বলে নামাজ ছেড়ে ওজু করার জন্য চলে যাবেন। ওজু করে ফিরে এসে জামাতের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন এবং মুক্তাদি হিসেবে বাকি নামাজ আদায় করবেন। ওজু করতে যাওয়ার সময় যে রাকাতগুলো ছুটে গেল, তা পরে মাসবুক হিসেবে আদায় করবেন। এ ক্ষেত্রে ইমাম হিসেবে যতটুকু নামাজ তিনি আদায় করে গেছেন, তা আবার আদায় করতে হবে না। এই পদ্ধতিকে আরবিতে বলে ‘বিনা’।
(দুই) এ মাসআলা অনিচ্ছাকৃত ওজু ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ইচ্ছাকৃত ওজু ভেঙে ফেললে এমনভাবে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। অবশ্য এভাবে আগের নামাজে যুক্ত না হয়ে নতুন করে পুরো নামাজ পড়াই উত্তম। কোনো কোনো আলিম বলেছেন, একাকী নামাজরত ব্যক্তির এমন হলে তার জন্য ওজু করে নতুনভাবে নামাজ পড়া উত্তম। তবে মুক্তাদি বা ইমামের জন্য নতুনভাবে না পড়ে জামাতে যুক্ত হয়ে ফজিলত অর্জন করাই উত্তম।
(তিন) ওজু করার পর একাকী নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি চাইলে ওজুর স্থানেই (যদি পরিবেশ থাকে) বাকি নামাজ শেষ করতে পারবেন। চাইলে আগের স্থানে গিয়েও শেষ করতে পারবেন। তবে মুক্তাদি ওজু করে বাকি নামাজ আদায় করতে চাইলে তাকে অবশ্যই আগের স্থানে ফিরে গিয়ে জামাতে যুক্ত হতে হবে। তবে ততক্ষণে জামাত শেষ হয়ে গেলে অথবা ওজুর স্থান পর্যন্ত জামাতের মুসল্লি দাঁড়ালে মুক্তাদি সেখানেও দাঁড়াতে পারবেন।
(চার) যদি ব্যক্তি ওজু ভেঙে গেছে মনে করে নামাজ ছেড়ে ওজু করতে চলে যান এবং পরক্ষণে বুঝতে পারেন যে, আসলে তার ওজু ভাঙেনি, তবে তিনি যদি মসজিদ থেকে বের না হন, তবে বাকি নামাজ আদায় করতে পারবেন। আর মসজিদ থেকে বের হয়ে গেলে তাকে নতুনভাবে নামাজ আদায় করতে হবে। আর তিনি যদি ইমাম হন এবং কাউকে স্থলাভিষিক্ত করে যান। তবে প্রথম ইমামের নামাজ ভেঙে যাবে।
(পাঁচ) যদি শেষ বৈঠকের তাশাহহুদ পড়ার পরে ওজু ভেঙে যায়, তবে ওজু করে সালাম ফিরিয়ে নিলেই হবে। ইমাম হলে কাউকে স্থলাভিষিক্ত করে ওজু করতে যাবেন। ওজু করে এসে মুক্তাদি হিসেবে সালাম ফেরাবেন। তবে তাশাহহুদ পড়ার পর মুসল্লির ইচ্ছাকৃত ওজু ভাঙলে নামাজ পূর্ণ হয়ে যাবে। তবে সালাম ফেরানোর ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার কারণে গুনাহগার হবেন।
(ছয়) একাকী নামাজের ক্ষেত্রে রুকু বা সিজদায় যদি ওজু ভেঙে যায়, তবে তিনি ওজু করে সেই রুকু বা সিজদা থেকেই শুরু করবেন। কারণ সেই রুকু বা সিজদা ওজু ভেঙে যাওয়ার কারণে পুরোপুরি আদায় হয়নি। জামাতে হলে ওজু করে এসে ইমামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাকি নামাজ আদায় করবেন। মাঝখানে ছুটে যাওয়া রাকাত মাসবুক হিসেবে আদায় করবেন।
(সাত) যে ইমামের সঙ্গে মাত্র একজন মুক্তাদি আছেন, সেই ইমামের ওজু ভেঙে গেলে এবং তিনি ঐ মুক্তাদিকে স্থলাভিষিক্ত না করেই বেরিয়ে গেলে, ঐ মুক্তাদি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভারপ্রাপ্ত ইমাম হয়ে যাবেন। আর আসল ইমাম ওজু করে এসে মুক্তাদি হিসেবে বাকি নামাজ শেষ করতে পারবেন।
(আট) একজন মুক্তাদির ক্ষেত্রে মুক্তাদি নারী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে হলে এবং ইমামের ওজু ভেঙে গেলে, দুজনেরই নামাজ ভেঙে যাবে। দুজনকেই নতুনভাবে নামাজ আদায় করতে হবে।
- যে দোয়া পড়লে মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
- যে দোয়া পড়বেন রোগীর সুস্থতার জন্য
- কুরআন-হাদিসের আলোকে জেনে নিন কুরবানির ইতিহাস
- খারাপ স্বপ্ন দেখলে রাসুল (সা.) যে আমল করতে বলেছেন
- সর্বোত্তম খাবার ও উপার্জন
- রাসুল (সা.)-এর কবর খনন করেন যিনি
- অহংকার পতনের মূল
- মু’আয বিন জাবাল (রা.)কে মহানবী (সা.)-এর ১০ উপদেশ
- যেসব ছোট আমলে বেশি নেকি
- নামাজ না পড়লে দুনিয়ার যেসব শাস্তি অনিবার্য