আদালতের রায় আসা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান শেখ হাসিনার
নিউজ ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কোটা সংস্কার নিয়ে সবোর্চ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।গতকাল বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধা ৭টায় জাতীর উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ পবিত্র আশুরা, কারাবালা দিবস। এ দিন মোহাম্মদ (স.) এর দৌহিত্র ও পরিবারের সদস্যরা নিহত হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলার মাটিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করে আরেক কারাবালা সৃষ্টি হয়েছিল। যারা মাহাদাত বরণ করেছেন আমি তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী আজকে অত্যান্ত বেদনা ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। জনগণের উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের মানুষ যখন শান্তিতে থাকা শুরু করে তখনই এমন এমন ঘটনা ঘটে, যা অত্যান্ত বেদনা দায়ক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা প্রথা বাদ দিয়ে একটি পরিপত্র জাড়ি করে। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে উচ্চ আদালত সরকারের পরিপত্র বাতিল করে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র রাখার জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়। মহামান্য আদালত শুনানির দিন ধার্য করে। এ সময় ছাত্ররা আবারো কোটা আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনের শুরু থেকে সরকার যথেষ্ট ধর্য ও সহনশিলতা পর্দশন করেছে। আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চত করারর ক্ষেত্রে পুলিশ সহযোগিতা করে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো কিছু মহল এই আন্দোলনে সুযোগটা নিয়ে অনাকাঙ্খিত উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই বেদনা দায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন চলে গেল। আপনজন হারানো যে কত কষ্টের তা আমার থেকে কেউ বেশি জানে? যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যেসকল ঘটনা ঘটেছে তা কখনো কাম্য ছিল না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে নিচে ছুঁড়ে ফেলে, অনেক ছাত্রের হাত পায়ের রগ কেটে দেয়। তাদের ওপর লাঠিপেটা এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে, একজন মৃত্যুবরণ করেছে, অনেকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ঢাকা, রংপুর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবন ও ছাত্রছাত্রীদের আবাসিক হলে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করা হয়। সাধারণ পথচারীদেরও আক্রমণ করা হয়। মেয়েদের হলে ছাত্রীদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং তাদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত তাদের সাথে এসব সন্ত্রাসীর কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সন্ত্রাসীরা এদের মধ্যে ঢুকে সংঘাত ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে তাদের পরিবারের জন্য জীবন-জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে যে সহযোগিতা দরকার তা আমি করবো।’
তিনি বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, এরা যে-ই হোক না কেন, তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি আরও ঘোষণা করছি, হত্যাকাণ্ডসহ যেসব অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু বিচার ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সে সকল বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। কাদের উসকানিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো, কারা কোনও উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিল, তা তদন্ত করে বের করা হবে। আমি আন্দোলনরত কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই সন্ত্রাসীরা যেকোনও সময়ে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি করে তাদের ক্ষতিসাধন করতে পারে। তাই শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের প্রতি আমার আবেদন থাকবে, তারা যেন তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ থাকেন। একই সঙ্গে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে নজর রাখেন।’
তিনি আরো বলেন,‘সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আপিল আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালত শিক্ষার্থীদের কোনও বক্তব্য থাকলে তা শোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে। এই আইন প্রক্রিয়া সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতিকারীদের সংঘাতের সুযোগ করে দেবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য আমি সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার বিশ্বাস আমাদের ছাত্র সমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে, তাদের হতাশ হবে না। ইনশাআল্লাহ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আামাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে সকলের সহযোগিতায় স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবে। আমি আবারও এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় যারা নিহত হয়েছে তাদের জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি এবং পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাচ্ছি।’
- PM opens Southeast Asia`s largest fertiliser factory in Narsingdi
- Tk 12,500 announced as minimum wage for RMG workers
- PM vows to make leprosy free Bangladesh by 2030
- Bangladesh joins `50-in-5` campaign as first-mover country to implement DPI
- রাজধানীতে আজ চালু হলো ১০টি ইউটার্ন
- আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাঃ রাষ্ট্র বনাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
- কৃষিপণ্য কেনাবেচার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ফুড ফর ন্যাশন’ উদ্বোধন করে
- বঙ্গবন্ধুর সাথে ছোট বেলার স্মরণীয় মধুর স্মৃতি
- ২৫তম পর্ব: কর্ডন প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই
- Metro-rail brings ease in capital`s nightmare transport system